মুহাম্ম্দ(সাঃ)

bangla

ফিতরা কত টাকা ২০২৫ - ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক ফিতরা একটি ওয়াজিব ইবাদত। যাদের ওপর ফিতরা ওয়াজিব তাদের সবাইকে অবশ্যই ফিতরা আদায় করতে হবে। আমরা আপনাদের সামনে ফিতরা কত টাকা ২০২৫ সালের জন্য , ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে ?, ফিতরা দেওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করব।
ফিতরা কত টাকা ২০২৫ - ফিতরা দেওয়ার নিয়ম
ফিতরা কত টাকা বাংলাদেশের জন্য তা প্রতিবছর ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নির্ধারণ করে থাকেন। আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি ফিতরা কত টাকা ২০২৫ সালের জন্য সহ ফিতরা সংক্রান্ত আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

ফিতরা কত টাকা ২০২৫ - ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

ফিতরা কি ?

ঈদ-উল-ফিতরের দিন সুবহে সাদেকের সময় যে মুসলমান জীবিকা নির্বাহের অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমনঃ খাদ্যদ্রব্য, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি এবং ঋণ ব্যতীত ৭.৫ বা সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা ৫২.৫ বা সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা অথবা এ পরিমাণ মূল্যের অন্য কোনো সম্পদের মালিক থাকবে তার ওপর ফেতরা প্রদান করা ওয়াজিব হবে।

ফিতরা কত টাকা ২০২৫ সালের জন্য

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নির্ধারণ করেছেন সর্বনিম্ন ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৮০৫ টাকা। ১১ মার্চ, ২০২৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

  1. স্ত্রীলোকের গহনা অতি প্রয়োজনীয় উপকরণের মধ্যে গণ্য নয়। সুতরাং যার নিকট সাড়ে সাত ৭.৫ তোলা স্বর্ণ কিংবা সাড়ে বাহান্ন ৫২.৫ তোলা রুপার সমপরিমাণ মূল্যের গহনা থাকবে তার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে।
  2. নিজ সন্তানকে এবং নিজের মাতা-পিতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা নিজের পুত্র-কন্যা, নাতি-নাতনি ইত্যাদিকে ফিতরা দেওয়া জায়েজ নয়। তবে মাতা-পিতা গরিব হলে তাদেরকে হাদিয়া-তোহফা স্বরূপ পৃথকভাবে দান করে সাহায্য করবেন।
  3. যদি কোনো ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত থাকে, তবে ঋণ ব্যতীত যদি সে সাহেবে নিসাব হয় তবে তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হবে অন্যথা হবে না ।
  4. ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয়। অতএব কেউ তার কিছু পূর্বে মারা গেলে তার ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে না, তার সম্পত্তি হতে তা দেওয়া লাগবে না।
  5. সাহেবে নিসাবের সুবহে সাদেকের পূর্বে কোনো সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তার ফেতরা দিতে হবে। কিন্তু সুবহে সাদেকের পরে ভূমিষ্ঠ হলে দিতে হবে না ।
  6. ঈদের দিনের পূর্বে ফিতরা আদায় করলেও জায়েজ হবে। তবে ঈদের দিন সকালে নামাজের পূর্বে ফিতরা আদায় করা মোস্তাহাব। কারো ভুলে অনাদায় থাকলে পরে আদায় করতে হবে।
  7. সাহেবে নিসাব পুরুষের একটি সাবালেগ সন্তান যদি পাগল হয়, তবে তার পক্ষ হতে ফিতরা আদায় করা তার পিতার ওপর ওয়াজিব।
  8. এতিম সন্তান যদি সাহেবে নিসাব হয়, তবে তাদেরও ফিতরা দিতে হবে ৷
  9. একজনের ফিতরা একজন মিসকিনকে পুরা দেওয়া উচিত। তবে একাধিক মিসকিনের ভিতরে এক জনের ফেতরা ভাগ করেও দিতে পারে।
  10. যারা যাকাত পেতে পারে, ফিতরাও তারা খেতে পারবে অর্থাৎ যাকে জাকাত দেওয়া যায় তাকে ফিতরাও দেওয়া যায় ।
  11. মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন বা তারাবীহ নামাজের ইমাম গরিব হলে তাদেরকে ফিতরা দেয়া যায়েজ। কিন্তু বেতন হিসেবে দেওয়া যাবে না, দিলে ফেতরা আদায় হবে না ।
  12. ফিতরা নগদ টাকা কিংবা খাদ্য দ্রব্য উভয় ভাবেই দেওয়া যায়। তবে খাদ্য দ্রব্যের মাধ্যমে দেওয়া উত্তম।

ফিতরা কার ওপর ওয়াজিব ?

  • যেসকল মুসলমান জীবিকা নির্বাহের অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমনঃ খাদ্যদ্রব্য, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি এবং ঋণ ব্যতীত ৭.৫ বা সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা ৫২.৫ বা সাড়ে বাহান্ন তোলা রুপা অথবা এ পরিমাণ মূল্যের অন্য কোনো সম্পদের মালিক থাকবেন তারা ফেতরা দিবেন।
  • ফিতরাকে সদকায়ে ফিতর বলে, আর উপরোক্ত সম্পদের মালিক ব্যক্তিকে সাহেবে নিসাব বলা হয় । সদকায়ে ফিতর প্রদানকারী ব্যক্তি তার নিজের ও তার সম্পদহীন ছোট সন্তানদের পক্ষ থেকে আদায় করবে।
  • সন্তানরা যদি ধনী হয়, তবে তাদের নিজের মাল থেকে প্রদান করবে। স্ত্রী মালদার হলে শুধু সে নিজের ফেতরা আদায় করবে, ছেলে-মেয়েদের ফেতরা তার ওপর আদায় করা ওয়াজিব নয় । সাবালক সন্তানদের ফেতরা পিতার আদায় করা ওয়াজিব নয় ।

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে ?

ফিতরা আদায়ের জন্য নিকটবর্তীরাই বেশি প্রাধান্য পাবেন।যেমন:
  1. আত্মীয়-স্বজন
  2. পাড়া-প্রতিবেশী
  3. পার্শ্ববর্তী গরিব- মিসকিন।

ফিতরার প্রয়োজনীয়তা

ফিতরা প্রদান করা ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ওয়াজিব। এখানে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, ফিতরা সকলের জন্য ওয়াজিব নয় শুধুমাত্র সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য ওয়াজিব। সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট হারে ফিতরা আদায় করে যারা এর প্রাপ্য তাদের কাছে পৌঁছে দিবেন।
ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে সমাজের ধনী গরিবের বৈষম্য দূর হয়। ঈদ মুসলমানদের জীবনে পবিত্র একটি উৎসব, এ উৎসবে যেন সকলেই সমানভাবে শরিক হতে পারে সেজন্যই ফিতরা প্রদান করা প্রয়োজন। ফিতরা আদায় করলে সমাজের গরিবেরা ঈদের দিনে নিজেদের সমর্থ্য অনুযায়ী ঈদের আনন্দ করতে পারবেন। তাই সমাজের সামর্থ্যবানদের উচিত যথাযথ নিয়মের ফিতরা আদায় করা।

ফিতরা কত টাকা ২০২৫ - ফিতরা দেওয়ার নিয়ম : লেখক এর মতামত

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আপনাদের সামনে ফিতরা কি ? , ফিতরা কার ওপর ওয়াজিব ? , ফিতরা কত টাকা ২০২৫ সালের জন্য , ফিতরা দেওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরলাম।

এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

‍বিজ্ঞাপন

Google

abcd

ক্যরিয়ার

ইসলামিক ইনফো বাংলা

আমাদের ফেসবুক পেইজ