শীতে ত্বকের যত্ন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান

প্রিয় পাঠক আর কয়েক মাস পরেই বাংলাদেশের শুরু হবে শীতকাল। শীতকাল আসলে আমরা যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি সংস্থার সম্মুখীন হই তা হচ্ছে শীতে ত্বকের যত্ন। আজকে আমরা শীতে ত্বকের যত্ন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
শীতে ত্বকের যত্ন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান
শীতের সাধারণত আবহাওয়া রুক্ষ হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের ত্বক ও শুষ্ক হয়ে যায় এতে করে ত্বকের জন্য বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। প্রিয় পাঠক চলুন আমরা জেনে নেই, শীতে ত্বকের যত্ন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান।

বাংলাদেশের শীতকাল

বাংলাদেশের সাধারণত নভেম্বর মাসের শেষে এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে শীতের আগমন ঘটে থাকে। তবে শীতের প্রাদুর্ভাব সবচাইতে বেশি থাকে ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। অর্থাৎ এর সময়েই আপনাকে ত্বকের যত্নের ব্যাপারে অধিক সচেতন থাকতে হবে।

শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমূহ এবং কারণ

শীতে সাধারণত ত্বকের আদ্রতা হ্রাস পায় ফলে ত্বক শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে যায় অনেকেই পা ফাটা, চুলকানি একজিমা সহ বিভিন্ন রকমের চর্ম রোগে আক্রান্ত হন। শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার প্রধান কারণ হচ্ছে আমরা সচরাচর শীতকালে পানির ব্যবহার কমিয়ে দেই।
পানি খাওয়া থেকে শুরু করে, গোসল, নিয়মিত হাতমুখ ধোয়া সহ বিভিন্ন ত্বকের যত্ন আমরা কম নেই। যার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। পাশাপাশি এই সময় বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে।

শীতে ত্বকের যত্ন নিবেন যেভাবে

শীতে ত্বকের যত্ন: নিয়মিত গোসল

শীতের সময় আমরা অনেকেই গোসল করতে আগ্রহী থাকিনা যেটি আমাদের ত্বককে শুষ্ক করে দেওয়ার অন্যতম কারণ। আবার অনেকেই গোসলে গরম পানি ব্যবহার করি যার ফলে ত্বক আরো খসখসে হয়ে যায়। সেজন্য আমাদের করণীয় হচ্ছে, সামান্য কুসুম গরম পানি দিয়ে অল্প সময়ে গোসল শেষ করা এতে করে আপনার ত্বক স্বাভাবিক থাকবে।

শীতে ত্বকের যত্ন : পোশাক

শীতে অতিরিক্ত টাইট ফিটিং পোশাক না পরে এমন পোশাক পরতে হবে যেটি আপনার চলাচলের সহায়ক এবং কাজে আরামদায়ক। এমন পোশাক পরবেন না যেটির ফলে আপনার চলাচলে অসুবিধা হয়। এতে করে আপনার ত্বক আরো শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাবে, এমনকি এলার্জিরও কারণ হতে পারে।
এছাড়াও বাইরে বের হওয়ার সময় মাথায় টুপি, হাতে মোজা এবং পায়ে জুতা পড়ে বের হওয়া উচিত এতে করে ঠান্ডা বাহিত বিভিন্ন রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যাবে।

শীতে ত্বকের যত্ন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন

শীতের সময় আমরা অলসতা করে সঠিক পরিমাণে পানি পান করি না। যার ফলে আমাদের ত্বক আরো রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায় এজন্য আমাদেরকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ গ্লাস পানি পান করতে হবে এতে করে ত্বকের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং শুষ্ক হবে না।

শীতে ত্বকের যত্ন: ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

শীতে হালকা তেল আছে এরকম ভারী ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক স্বাভাবিক থাকবে তবে মনে রাখবেন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই গলা এবং মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে তারপর লাগাতে হবে।

শীতে ত্বকের যত্ন: জলপাই তেল, গোলাপ জল, গ্লিসারিন

একটি বোতলে সমপরিমাণে জলপাই তেল, গোলাপ জল, গ্লিসারিন মিশিয়ে রাখুন। যখনই আপনার ত্বক রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যাবে তখন এই   মিশ্রণটি  ত্বকে ব্যবহার করুন দেখবেন ত্বকে আদ্রতা ফিরে আসবে এবং আপনার ত্বক রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে থাকবে না।

শীতে ত্বকের যত্ন: ঠোট ও পা ফাটার সমাধান

শীত আসলে আমাদের অনেক ঠোঁট এবং পা ফাটে। অনেকের আবার ঠোঁট থেকে রক্ত বের হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে সবচাইতে বেশি সহযোগিতা করবে গ্লিসারিন। ঠোঁটের আদ্রতা ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের লিপ বাম ব্যবহার করতে পারেন। 
পা ফাটা প্রতিরোধে ভেসলিন ব্যবহার করুন। ভেসলিন এবং গ্লিসারিন মিলিয়ে পায়ে লাগিয়ে নিন। এর পাশাপাশি সেলোফিন পেপার দিয়েও পা মুড়িয়ে রাখতে পারেন।

শীতে ত্বকের যত্ন: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা

শীতের সময় আমরা সহজে পানি ব্যবহার করতে চায় না যেটি আমাদের বিভিন্ন রকম ত্বকের রোগের কারণ হতে পারে। সেজন্য নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। মাঝেমধ্যে হাত এবং মুখ ধুতে হবে। বাইরে থেকে আসার পরে অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে তাহলে বিভিন্ন রকম ত্বকের রোগ হতে মুক্তি পাওয়া যাবে।

শীতে ত্বকের যত্ন : সাবধানতা

শীতের সময় আমরা অনেকেই আগুনের সংস্পর্শে থাকতে পছন্দ করি। আবার অনেকেই ঘর গরম রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের হিটার ব্যবহার করে থাকি। শীতকাল আসলেই বিভিন্ন ধরনের ক্রিম লোশন ইত্যাদি ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
সকল ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে, আগুনের সংস্পর্শে থাকতে বা রুমে হিটার ব্যবহার করতে গিয়ে যেন কোন দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে যে রকম সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে পাশাপাশি ক্রিম,লোশন ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।

মানহীন পণ্য ব্যবহারের ফলে তোকে বিভিন্ন রকম রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে এতে হিতে বিপরীত হবে। তাই অবশ্যই গুণগত মান সম্পন্ন ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করবেন ।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা শীতে ত্বকের যত্ন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করব আমরা যে পরামর্শ গুলো দিয়েছি সেগুলোর মাধ্যমে আপনি শীতে ত্বকের যত্ন নিবেন এবং শীতে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সঠিকভাবে করে এবং সুস্থ থাকবেন। 

এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন বা মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

ইসলামিক ইনফো বাংলা