মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন - মুসলিম উত্তরাধিকার আইন- মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর

প্রিয় পাঠক আমরা অনেকেই মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন বা মুসলিম উত্তরাধিকার আইন সম্পর্কে জানতে চাই। আজকে আমরা হাজির হয়েছি মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন - মুসলিম উত্তরাধিকার আইন এবং মুসলিম ফারাজ ক্যালকুলেটর সম্পর্কে বিস্তারিত নিয়ে।
মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন - মুসলিম উত্তরাধিকার আইন- মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর
আজকের এই  আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারবেন একজন মৃত মুসলিমের যে সম্পত্তি থাকে সেটি কিভাবে, কাদের মাঝে এবং কতটুকু অংশে বন্টন করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত। আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন -  মুসলিম উত্তরাধিকার আইন  এবং মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর কে আমরা মোট পাঁচটি ভাগে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। এগুলো হল:
  • মুসলিম আইনে সম্পত্তির অংশীদারদের প্রকারভেদ 
  • মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন প্রক্রিয়া 
  • মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টনে নির্ধারিত অংশের পরিমাণ
  • মুসলিম উত্তরাধিকার আইন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক 
  • মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর

মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন - মুসলিম উত্তরাধিকার আইন- মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর

মুসলিম আইনে সম্পত্তির অংশীদারদের প্রকারভেদ

মুসলিম ফারায়েজ আইনে সম্পত্তির মোট অংশীদার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা:-
  1. জাবিউল ফুরুজ
  2. আসাবা
  3. দূরবর্তী আত্মীয়

জাবিউল ফুরুজ

জাবিউল ফুরুজ বলতে মৃত ব্যক্তির সেই সকল আত্মীয় কে বুঝায় যাদের অংশ পবিত্র কোরআন শরীফে নির্ধারণ করে দেয়া আছে।জবিউল ফুরুজ হল ১২ জন। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং বাকি ৮ জন মহিলা।
৪ জন পুরুষ হল –
  1. স্বামী,
  2. পিতা,
  3. দাদা,
  4.  সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)
৮ জন মহিলা হল 
  1. স্ত্রী,
  2. কন্যা,
  3. পুত্রের কন্যা,
  4. মাতা,
  5. দাদি এবং নানি,
  6. সহোদর বোন,
  7.  সৎ বোন (বৈমাত্রেয়),
  8. সৎ বোন (বৈপিত্রেয়)।

আসাবা বা অবশিষ্টভোগী 

 আসবা গণের চারটি শ্রেণী আছেঃ
শ্রেণী ১: এই শ্রেণীতে মোট চারজন রয়েছেন। যথা:
  1. পুত্র,
  2. কন্যা,
  3. পুত্রের পুত্র,
  4. পুত্রের কন্যা  
শ্রেণী ২: এই শ্রেণীতে মোট দুইজন রয়েছেন। যথা:
  1. পিতা,
  2. দাদা  
শ্রেণী ৩: এই শ্রেণীতে মোট ৮ জন রয়েছেন। যথা:
  1. সহোদর ভাই
  2.  সহোদর বোন
  3. বৈমাত্রেয় সৎ ভাই
  4.  বৈমাত্রেয় সৎ বোন
  5. সহোদর ভাইয়ের পুত্র
  6.  বৈমাত্রেয় সৎ ভাই-এর পুত্র
  7. সহোদর ভাইয়ের পুত্রের পুত্র,
  8.  বৈমাত্রেয় সৎ ভাই এর পুত্রের পুত্র।  
শ্রেণী ৪:এই শ্রেণীতে মোট ৮ জন রয়েছেন। যথা:
  1. চাচা,
  2.  বৈমাত্রেয় চাচা
  3. চাচাতো ভাই,
  4.  বৈমাত্রেয় চাচাতো ভাই
  5. চাচাতো ভাইয়ের পুত্র,
  6.  বৈমাত্রেয় চাচাতো ভাই এর পুত্র, 
  7. চাচাতো ভাইয়ের পুত্রের পুত্র,
  8.  বৈমাত্রেয় চাচাতো ভাই এর পুত্রের পুত্র
 ★★★ শুধুমাত্র পুরুষ অথবা মহিলা আসাবা হিসাবে থাকলে, অবশিষ্টাংশের সম্পূর্ণ অংশ পুরুষ অথবা মহিলা পাবেন, কিন্তু একই শ্রেণীর পুরুষ ও মহিলা একত্রে আসাবা হিসাবে থাকলে, পুরুষ ও মহিলাগণ ২:১ অনুপাতে অবশিষ্টভোগী হবেন।

মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন প্রক্রিয়া

ধাপঃ ০১ - প্রথমে সম্পত্তি জবিউল ফুরুজ দের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে ।

ধাপঃ ০২ - জবিউল ফুরুজ দের অংশ সমূহ যোগ এর পরে সম্পূর্ণ অংশটি ১ এর চেয়ে বেশী হলে, সকল অংশ আনুপাতিক হারে কমে আসবে যাতে সম্পূর্ণ অংশটি ১হয়।
ধাপঃ ০৩ - যদি কোন আসাবা না থাকেন এবং সম্পূর্ণ অংশ ১ এর চেয়ে কম হলে স্বামী স্ত্রী এর অংশ ছাড়া জবিউল ফুরুজ অংশ সমূহ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে যাতে মোট অংশটি ১ হয়। স্বামী/স্ত্রী এর অংশ কঠিনভাবে সুনির্দিষ্ট করা।

ধাপঃ ০৪ - আসাবা থাকলে অবশিষ্ট অংশ আসাবাগন পাবেন নিম্নের ক্রম অনুযায়ী পাবেনঃ
শ্রেণী ১ >শ্রেণী ২>শ্রেণী ৩>শ্রেণী ৪

★★★ শ্রেণী ১ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন,শ্রেণী ২ থাকলে পরের শ্রেণীর আসাবাগন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন; এভাবে চলতে থাকবে)

মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টনে নির্ধারিত অংশের পরিমাণ

স্বামী

  • ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
  • ১/২ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।

স্ত্রী

  • ১/৮ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
  • ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে ।

কন্যা

  • ১/২ পাবে যখন একজন মাত্র কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
  • ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
  • অবশিষ্ট ভোগী হিসাবে পাবেন যখন এক বা একের অধিক পুত্র থাকে।

পুত্রের কন্যা

  • ১/২ অংশ পাবে যখন একজন মাত্র পুত্রের কন্যা থাকে। যদি কোন পুত্র, পুত্রের পুত্র বা একের অধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা না থাকে।
  • ২/৩ ভাগ পাবে যখন দুই বা ততধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং এবং একের অধিক কন্যা না থাকে।
  • অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবেন। পুত্রের পুত্র না থাকলে সমান অংশ আইন অনুযায়ী।

পিতা

  • ১/৬ অংশ পাবে পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।
  • ১/৬ অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন এক বা একরে অধিক কন্যা, পুত্রের কন্যা এবং পুত্রের পুত্র না থাকে।
  • অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন পুত্র বা পুত্রের পুত্র থাকে।

মাতা

  • ১/৬ অংশ পাবে যখন পুত্র ও পুত্রের পুত্র এবং দুই বা ততধিক ভাই বোন এবং পিতা থাকে।
  • ১/৩ অংশ পাবে যখন পুত্র অথবা পুত্রের পুত্র এবং একের অধিক ভাই বোন না থাকে ।
  • ১/৩ অংশ পাবে যখন স্ত্রী, স্বামী এবং বাবা থাকে।

দাদা

  • ১/৬ অংশ পাবে যখন সন্তান এবং পুত্রের সন্তান থাকে এবং পিতা বা নিকটতম পিতামহ না থাকে।
  • অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে ১/৬ অংশ পাবেন যখন কন্যা অথবা পুত্রের কন্যা থাকে।
  • অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যদি দূরবর্তী কোন অংশিদার বা অকশিষ্ট অংশ ভোগী না থাকে।

দাদী

  • ১/৬ অংশ পাবেন যদি কোন মাতা বা মায়ের দিকে দাদী না থাকে।

পূর্ণ বোন

  • ১/২ অংশ পাবেন যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং যদি কোন সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা অথবা ভাই না থাকে ।
  • ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক বোন থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা ও ভাই না থাকে।
  • ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক বোন থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান, পিতা ও ভাই না থাকে।
  • অবশিষ্ট ভোগী হিসেবে পাবে যখন পূৰ্ণ ভাই থাকে বা এক বা একাধিক পুত্রের কন্যা থাকে এবং বোনকে বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে এবং এক বা একাধীক কন্যাদের সহিত অবশিষ্ট ভোগী থাকে তারা কন্যাদের অংশ নেওয়ার পর অবশিষ্ট ভোগী হবে।

বৈমাত্রীক বোন

  • ১/২ অংশ যখন একজন মাত্র বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
  • ২/৩ অংশ যখন দুই বা ততধিক বৈমাত্রীক বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা ও পূর্ণ ভাই বোন না থাকে।
  • ১/৬ ভাগ যখন একজন পূর্ণ বোন থাকে (বোন পাবে ১/২ এবং বৈমাত্রীক বোন পাবে ২/৩, ১/২, ১/৬)।
  • অবশিষ্ট অংশ ভোগী হিসেবে পাবে যখন কোন বৈমাত্রীয় ভাই, এক বা একাধিক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা এবং বঞ্চিত করার মত কোন অংশিদার না থাকে।

বৈমাত্রীয় ভাই

  • ১/৬ অংশ পাবে যখন সুধু মাত্র একজন বৈমাত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, পুত্রের সন্তান ও পিতা না থাকে।

বৈপিত্রীয় ভাই

  • ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় ভাই থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।

বৈপিত্রীয় বোন

  • ১/৬ অংশ পাবে সেখানে একমাত্র বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা না থাকে।
  • ১/৩ অংশ পাবে যখন সেখানে দুই বা ততধিক বৈপিত্রীয় বোন থাকে এবং সন্তান, সন্তানের সন্তান এবং পিতা নাথাকে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক

  • নিকটবর্তী ওয়ারিশেরা থাকলে দুরবর্তী ওয়ারিশ সম্পত্তি পাবে না।যেমন: পিতা থাকলে দাদা পাবে না।
  • মৃত্যুকালে যার দ্বারা সম্পর্কযুক্ত তিনি বেচে থাকলে পরবর্তী সম্পর্কযুক্ত ব্যাক্তি সম্পত্তি পাবে না।যেমন: ভাই বেচে থাকলে ভাই এর পুত্র পাবে না।
  • মৃত ব্যাক্তির পিতাকে ১/৬,মাতাকে ১/৬,স্ত্রীকে ১/৮দেবার পর বাকি সম্পত্তি পুত্র-কন্যারা পাবে।
  • মৃত ব্যাক্তি কোন পুত্র না থাকলেস্ত্রীকে ১/৮,কন্যাকে ১/২, মাতাকে ১/৬দেবার পর বাকি অংশ পিতা পাবে।
  •  স্বামী-স্ত্রী বেচে থাকলে তাদের অংশ দেবার পর মাতা অবশিষ্ট সম্পত্তির ১/৬ ভাগ পাবে।
  •  পুত্র বা পিতার বর্তমানে ভাই-বোন ওয়ারিশ হবে না।
  • স্বামী-স্ত্রী,পিতা-মাতা,পুত্র-কন্যা,ভাই-বোন না থাকলে দুরবর্তী আত্নীয়গণ সম্পত্তি পাবে।
  •  পিতা- মাতা ও সন্তান না থাকলেবোন ১/২ পাবে, বোন একাধিক হলে ২/৩ পাবে এবং ভাই-বোন থাকলে ২:১ পাবে ।
  • মৃত ব্যাক্তি নিঃসন্তান হলে পিতা ২/৩ এবং মাতা ১/৩ পাবে।
  • নিঃসন্তান বোনের সম্পত্তি ভাই পাবে।
  • লিঙ্গ নির্ধারণে সমস্যা হলে , এমন সন্তানকে মেয়ে হিসেবে গণ্য করে সম্পদ ভাগ করতে হবে।
  • গর্ভস্থ সন্তানকে জীবিত হিসেবে গণ্য করে সম্পদ বন্টন করা যাবে । গর্ভস্থ সন্তানকে পুত্র হিসেবে সম্পদ বন্টন করতে হবে।
  • মৃত ব্যাক্তির ঋণ থাকলে আগে ঋণ পরিশোধ করে তারপর সম্পদ বন্টন করতে হবে।বন্টনের পর করলে ফারায়েজ মোতাবেক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
  • মৃতের পিতা, পুত্র, পুত্রের পুত্র থাকলে বোন সম্পত্তি পাবে না।
  • সহোদর ভাই বৈমাত্রেয় ভায়ের আগে ওয়ারিশ হবে।
  • কণ্যা পিতার সম্পত্তি ন্যায় মায়ের সম্পত্তিতে অংশ পাবে।
  • মৃত ব্যাক্তির পুত্র,কণ্যা, পুত্রের পুত্র,দাদা বর্তমান থাকলে বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই-বোন সম্পত্তি পাবে না।
  • পিতা-মাতা না থাকলে নানী ও দাদী থাকলে উভয়ে একত্রে ১/৬ ভাগ পাবে ।
  • যার সম্পত্তি বন্টন হচ্ছে তার মৃত্যুর পূর্বে তার কোন পুত্র কিংবা কণ্যা মারা গেলে এবং মৃত পুত্র বা কণ্যার কোন সন্তান বর্তমান থাকলে সে সন্তান ঐ পরিমাণ সম্পত্তি পাবে যা তার পিতা – মাতা জীবিত থাকলে পেত। (১৯৬১ সালের ৪ ধারা মোতাবেক)।

মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর

প্রিয় পাঠক বাংলাদেশ সরকার মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন বা মুসলিম উত্তরাধিকার আইন এর হিসাব সহজে করার জন্য উত্তরাধিকার নামের একটি অনলাইন সেবা ব্যবস্থা চালু করেছে। যেটি মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর নামে পরিচিত। আপনারা খুব সহজেই এই লিংকে ক্লিক করে মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটরে মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন এর হিসাব করতে পারবেন। লিংকটি হলো= মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের দীর্ঘ আলোচনায় আপনাদের সামনে মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন , মুসলিম উত্তরাধিকার আইন  এবং মুসলিম ফারায়েজ ক্যালকুলেটর। সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করব আমাদের আজকের আলোচনাটি আপনার উপকারে আসবে। 

এ সংক্রান্ত আপনাদের যেকোনো মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম প্রয়োজনীয় আরও তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং গুগল নিউজে আমাদের পেজটিতে ফলো দিয়ে রাখুন। ধন্যবাদ।।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

ইসলামিক ইনফো বাংলা